পৃথিবীর মধ্যে অনেক দেশে নানা ধরণের ভবন আছে। বিশ্বের আকাশচুম্বী ভবন গুলোর মধ্যে একমাত্র চীনেই তিনটি তার মধ্যে সিআইটিআইসি টাওয়ার এই ভবন টি চিনের তৃতীয়তম অট্টালিকা। ভবন টির নাম সিআইটিআইসি হলেও চায়নাতে বা অন্য অন্য দেশে ‘চায়না জুন‘ নামে পরিচিত। ভবন টি চায়নার বেইজিংয়ের কেন্দ্রীয় বাণিজ্যিক এলাকায় একটি বৃহৎ উচু ভবন। বিল্ডিং টির কাজ করেছেন চায়নার খুব নামকরা কনস্ট্রাকশন সাইট-চায়না কনস্ট্রাকশন থার্ড ইঙ্গিনিয়ারিং ব্যুরো।
বিল্ডিং টির মাটির নিচের কাঠামোর বা পাইলিং এর কাজ শুরু করা হয় ১৯শে সেপ্টেম্বর ২০১১ সালে। বিল্ডিং টির উপরি ভাগের মানে পরিপূর্ণ ভাবে তৈরির কাজ শুরু করা হয় ১৫ মে ২০১২ সাল থকে। বিল্ডিং টির কাজ শুরু হওয়ার পর কখনো কাজ বন্ধ করা বা স্থগিত করা হয়নি। ৩০শে সেপ্টেম্বর ২০১৮ সালে বিল্ডিং টির পরিপূর্ণ কাজ শেষ করা হয় এবং ২০১৮ সালেই বিল্ডিং টি জনসাধারণ এর জন্য খুলে দেওয়া হয়। বিল্ডিং টি তৈরি করতে খরচ হয়েছে ( ৩.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ) এতো খরচ হয়ার কারন বিল্ডিং টি চায়নার সবচেয়ে vip বিল্ডিং হিসেবে তৈরি করেছে।
সিআইটিআইসি টাওয়ার বা চাইনা জুন বিল্ডিং টি ১০৯ তলা করে তৈরি করা হয়েছে। যার উচ্চতা ৫২৮ মিটার বা ১,৭৩২ ফুট বিল্ডিং টি শহরের সবচেয়ে উচু বিল্ডিং এবং চায়না ওয়ার্ল্ড ট্রেড ১১১ তলা বিল্ডিং এর চাইতেও ৬২০ ফুট উচু। ২০১৬ সালে CITIC tower বেইজিংয়ের চায়না ওয়ার্ল্ড ট্রেড ১১১ তলা বিল্ডিং টির রেকর্ড ছাড়িয়ে CITIC tower বেইজিংয়ের সবচেয়ে উচু ইমারত হিসেবে জায়গা দখল করে। বিল্ডিং টিকে বিশ্বের ১০ম তম আকাশচুম্বী অট্টালিকা হিসেবে ধরা হয়।
চাইনা জুন বিল্ডিং টি মাত্র ৫ বছরে ২০১৮ সালে বিশ্বের সবচেয়ে উচু ভবন হিসেবে সম্পূর্ণ ভাবে পরিণত হয়। যা এখন ২০২৪ সাল অনুযায়ী বিশ্বের সবচেয়ে উচু বিল্ডিং যেখানে বিল্ডিং এর উপরে হেলিপ্যাড আছে। যেখানে প্রতি নিয়ত হেলিকপ্টার নামানো যায়। বিশ্বের সবচেয়ে উচু বিল্ডিং বলার কারন হলো, সিআইটিআইসি টাওয়ার এর উচ্চতা ১০৯ তলা হলেও ৮ তলা মাটির নিচে তৈরি করা হয়েছে, কারন চায়নার বেশীরভাগ বিল্ডিং এর তলা মটির নিচে বানানো হয়েছে। কারন বিল্ডিং টি যে জায়গায় তৈরি করা হোকনা কেনো মাটির উর্বরতা দেখে বিল্ডিং টি কতো তলা করা যাবে তা নির্ধারণ করা হয়। চাইনা জুন বিল্ডিং তির মাটির নিচে ৮ তলা দেওয়ার কারন ভুমিকম্পনে বিল্ডিং এর জেনো ক্ষতি না হয়।
সিআইটিআইসি টাওয়ার বা চাইনা জুন বিল্ডিং টি বাণিজ্যিক এলাকার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। বাণিজ্যিক এলাকা হওয়ার কারনে সেখানে অনেক যানজট এর সমস্যা থাকতো। চাইনা জুন বিল্ডিং টি তৈরি করার পর বিল্ডিং টির কর্তিপক্ষ যানজট কমানোর জন্য ১৮০ মিটার বা ৫৯০ ফুট উচ্চতায় কেন্দ্রিও ব্যবসায়িক একটি স্থান বা প্রকল্প করার চুক্তি নিয়েছেন।
চাইনা জুন বিল্ডিং টি মিশ্র ব্যবহিত বিল্ডিং হিসেবে ধরা হয়, বিল্ডিং টিতে সকল কিছু পাওয়া যায়। আপনার ব্যবহিত সকল কিছু পাবেন এই বিল্ডিং এর মধ্যে। আপনার ভ্রমণ বা ভেকেশন এর জন্য সুন্দর একটি জায়গা। বিল্ডিং টিতে আছে ৬০ তলা পর্যন্ত অফিস স্পেস যেখানে অফিস কর্মকর্তা বা কর্মচারি দের জন্য আধুনিক ভাবে তৈরি করা অফিস স্পেস। ২০ তলা তে ৩০০ রুম বিশিষ্ট এপার্টমেন্ট বা আবাসিক। যার মধ্যে অনেক গুলো বিলাসবহুল রুম আছে। এবং ২০ তলা রয়েছে নানা ধরনের হোটেল, যেখানে আছে রেস্তোরাঁ বা বিনোদন কেন্দ্র। পর্যটক দের জন্য আছে নানা ধরনের খাবার এবং পর্যটন কেন্দ্র। বিল্ডিং টির ১৭১৯ ফুট উচ্চতায় ছাদের উপর বিশাল বাগান আছে। বিল্ডিং টিতে পর্যটক দের জন্য ১০৫ থেকে ১০৭ তলা পর্যটক ডেক। যেখান থেকে পুরো শহর দেখা যাবে।
সব চাইতে অবাক করা বিষয় হলো বিল্ডিং তির মাটির তিনতলা নিচে আছে শপিং মল। এবং তারও নিচে করা হয়েছে গাড়ি পার্কিং এরিয়া। এবং বিল্ডিং টির উপরের তিনটি তলা তৈরি করা হয়েছে খুব আধুনিক এবং নিরাপদ হিসেবে। কারন বেইজিংয়ের সংসদীয় কর্মকর্তাদের জন্য খুব সুরক্ষিত ভাবে রুম গুলো তৈরি করা হয়েছে। বেইজিংয়ের সংসদের পরে সিআইটিআইসি টাওয়ার তিনতলা সবচাইতে সুরক্ষিত স্থান হিসেবে ধারনা করা হয়েছে।